ভ্রমণ
হারিয়ে যাওয়া ইতিহাসের খোঁজে বীরভূমের নীলকুঠি
দোরগোড়ায় বর্ষা। এটা একটা আদর্শ সময় বীরভূমের নীলকুঠি দেখে আসার। হাতে একদিন সময় নিয়ে ইতিহাস প্রেমীরা বেরিয়ে পড়তে পারেন নীলকুঠি দর্শনে। আপনি যদি ইতিহাস ভালবাসেন তাহলে তো অন্তত পক্ষে একবার আপনার ঘুরে যাওয়া প্রয়োজন বীরভূমের মধ্যে অবস্থিত এই নীলকুঠি থেকে। তবে কোথায় অবস্থিত এই নীলকুঠি? অনেকের মনে এ প্রশ্ন জাগতেই পারে। আবার অনেকে হয়তো ভাববেন কীভাবে পৌঁছবেন এই নীলকুঠি।বীরভূমের বোলপুর শান্তিনিকেতন বোলপুর-লাভপুর সড়ক বরাবর কুয়ে নদী পার হয়ে লাভপুর থেকে লাঘাটা দিকে রওনা দিয়ে পৌঁছে যাওয়া যায় ময়ূরাক্ষী নদীর কাছে। সেতু পার হলেই সামনে বিস্তীর্ণ জঙ্গল।আর তারই মাঝে জরাজীর্ণ একটি মিনার।জঙ্গলে আর একটু ঢুকলে রয়েছে নির্মাণ কাজের ইটের টুকরো।সেই ইট প্রায় আড়াইশো বছরের পুরানো গুনুটিয়ার নীলকুঠি মহলের নানা ইতিহাসের সাক্ষী।
সেই হারিয়ে যাওয়া ইতিহাসকে ঘিরে এ বার পর্যটনকেন্দ্র গড়ার দাবি তুলেছেন স্থানীয়রা। বীরভূমের লাভপুরের গুনুটিয়ার নীলকুঠির পরতে পরতে লুকিয়ে রয়েছে আরও নানা অজানা ইতিহাস।একদা বাংলার জলপথ বাণিজ্যের অন্যতম যোগসূত্র ছিল এই নীলকুঠি।ময়ূরাক্ষী এবং অজয় নদের জলপথ যোগাযোগের অন্যতম পথ হিসেবে ব্যবহার জন্য ১৭৭৫ সালে ব্রিটিশ বণিক এডওয়ার্ড হে গুনুটিয়ার নীলকুঠি নির্মাণ করেছিলেন। একদা জলপথে যাতায়াতের সুবিধা,আবহাওয়া, কাঁচামাল,উর্বর জমির জন্য বীরভূম জেলায় লাক্ষা, তুঁত, রেশম, নীল চাষ ভাল হত।রেশম চাষের জন্য এডওয়ার্ড বীরভূমের লাভপুরে ময়ূরাক্ষী নদীর তীরে গুনুটিয়া কুঠি তৈরি করে।প্রথম দিকে এখান থেকে রেশম, তুঁত প্রভৃতি চাষের তত্ত্বাবধান করা হলেও পরবর্তীকালে নীল চাষ শুরু হয়।তাই গুনুটিয়া কুঠি পরিচিতি পায় নীলকুঠি হিসেবেই। তাই এবার বোলপুর লাভপুর গেলে অন্ততপক্ষে একবার ঘুরে আসুন এই নীলকুঠি থেকে। আপনার জীবনের সেরা ভ্রমণের ডেস্টিনেশন হবে এটি একদম বলা চলেই।
