ক্যান্সারের কিছু স্বাভাবিক উপসর্গ চিনে রাখুন
ক্যানসার এমন এক রোগ যা নিঃশব্দে শরীরে বেড়ে ওঠে এবং অধিকাংশ সময় তা তখনই ধরা পড়ে যখন অবস্থা অনেকটা জটিল হয়ে পড়ে। যদিও আমাদের শরীর আগেই কিছু লক্ষণ দিয়ে সাবধান করে, কিন্তু আমরা অনেক সময় সেগুলিকে সাধারণ ভেবে অবহেলা করি। এই সাইলেন্ট বা নিঃশব্দ উপসর্গগুলিকে যদি সময়মতো শনাক্ত করা যায়, তাহলে ক্যানসারের চিকিৎসার সম্ভাবনা বহুগুণ বেড়ে যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সচেতনতা এবং সঠিক সময়ে স্ক্রিনিং করানোই ক্যানসারের বিরুদ্ধে জয় পাওয়ার প্রথম ধাপ। ভয় পাওয়ার নয়, বরং সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন আছে। ক্যানসারের উপসর্গ ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে, তবে কিছু সাধারণ লক্ষণ আছে, যেগুলিকে কখনোই অবহেলা করা উচিত নয়। চিকিৎসকদের মতে, যদি এই লক্ষণগুলো নিয়মিতভাবে দেখা যায়, তাহলে অবিলম্বে চিকিৎসা পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।
ক্রমাগত ক্লান্তি: যদি বিশ্রামের পরেও ক্লান্তি দূর না হয়, তবে তা ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে। ন্যাশনাল ক্যানসার ইনস্টিটিউট অনুযায়ী, লিউকেমিয়া বা কোলন ক্যানসারে এটি একটি সাধারণ উপসর্গ। ক্লান্তির সঙ্গে যদি দুর্বলতা বা শ্বাসকষ্ট হয়, তাহলে অবিলম্বে পরীক্ষা করানো দরকার।
ত্বকে পরিবর্তন ত্বকে নতুন তিল দেখা দেওয়া, ঘা যা শুকাচ্ছে না বা রঙের পরিবর্তন (যেমন হলদেটে হয়ে যাওয়া) ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে। স্কিন ক্যানসার বা লিভার ক্যানসারে এধরনের উপসর্গ দেখা যায়। ত্বকের যেকোনো অস্বাভাবিক পরিবর্তনকে গুরুত্ব দিন।
দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা যেমন দীর্ঘদিনের মাথাব্যথা, পিঠে ব্যথা বা পেটে ব্যথা—এই ধরণের যন্ত্রণা ব্রেন টিউমার, হাড়ের ক্যানসার বা ওভারির ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে। যদি ব্যথা ২-৩ সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয়, তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
অস্বাভাবিক রক্তপাত মল, মূত্র বা কাশিতে রক্ত দেখা দেওয়া, অনিয়মিত ঋতুস্রাব—এসব লক্ষণ ফুসফুস, কোলন বা সার্ভিক্যাল ক্যানসারের পূর্বাভাস হতে পারে। এটি ক্যানসারের গুরুতর অবস্থা নির্দেশ করে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ৪০ বছরের ঊর্ধ্বে প্রত্যেককে বছরে একবার ক্যানসার স্ক্রিনিং করানো উচিত। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, ধূমপান পরিহার এবং নিয়মিত শরীরচর্চা ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। ক্যানসার যদি প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়ে, তাহলে ৯০% ক্ষেত্রে তার চিকিৎসা সফল হয়।