অফবিট
অসম রাইফেলসের 'রাইফেলম্যান'কে দেখে খুশিতে মন ভরে ওঠে স্কুলের ছেলে মেয়েদের
'সীমান্তে আজ আমি প্রহরি' - কবি সুকান্তের কবিতার নায়কের মতো আরেক প্রহরির সন্ধান আমরা পেয়েছি। দেশের সেবার জন্য যে হাতে বন্দুক ওঠে, আবার সেই হাতই তুলে নেয় কলম, মুখে তুলে দেয় খাবার। পরনের সেনা পোশাক মনে করিয়ে দেয় দেশরক্ষার শপথ। আর নিজের শিকড় ভুলতে দেয় না যে, এখানেই থেমে থাকলে হবে না, যাদের কাছে শিক্ষার আলো চুঁইয়ে এসে পড়ে, তাদের স্বার্থে বন্দুকের ওই হাতেই তুলে ধরতে হবে বই। শুধু তো তাই নয়, তাদের জন্য করতে হবে দু'বেলা দু'মুঠো অন্নের জোগাড়ও। অসম রাইফেলসের 'রাইফেলম্যান' শক্তি পালের কাছে সেই দেশসেবা, দায়িত্বের সংজ্ঞা আরও বিস্তৃত।
সীমান্ত পাহারা দেওয়ার পাশাপাশি তিনি লড়ছেন আরও এক কঠিন যুদ্ধে - দারিদ্র্য আর অশিক্ষার বিরুদ্ধে। ১৯৯১ সালে শিলিগুড়িতে জন্ম শক্তি পালের। ছোটবেলাটা কেটেছে অন্ধকার আর অভাবের সঙ্গে যুদ্ধ করেই। খুব অল্প বয়সে বাবাকে হারিয়ে দেখেছেন মায়ের নিরন্তর সংগ্রাম, কেরোসিন তেল আর ডিম বিক্রি করে সংসার চলত তাঁদের। ছোট্ট শক্তির অনেক রাত কেটেছে হারিকেনের ম্লান আলোয় পড়াশোনা করে। কিন্তু সেই টিমটিমে কিন্তু দৃঢ় আলোই ভেতরে জাগিয়ে দিয়েছিল বড় এক স্বপ্ন। দীর্ঘ অধ্যবসায়ের পর ২০০৯ সালের নভেম্বরে সফলভাবে ভারতীয় সেনাবাহিনীর নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন শক্তি, যোগ দেন দেশের সেবায়। সেই সেবাই নিরন্তর চলেছে। নিজের মতো আর কোনও শিশুকে যেন অভাবের তাড়নায় জীবনের সঙ্গে যুঝতে না হয়, পড়াশোনার জীবন থেকে দলছুট যেন না হয়ে পড়ে কেউ - আরও একরকম কঠিন দেশসেবার স্বপ্ন নিয়েই শক্তি পাল গড়ে তোলেন ‘বিদ্যাছায়া পাঠশালা’।
.jpeg)